জান্নাতে নিষিদ্ধ ফল খাওয়া | আদম (আ.) ও মুসা (আ.)-এর ঐতিহাসিক কথোপকথন | Islamic Story

Estimated read time 1 min read

কুরআন ও সহিহ হাদিসে উল্লেখ আছে, জান্নাতে নিষিদ্ধ ফল খাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে আদম (আ.) ও মুসা (আ.)-এর মাঝে একটি বিশেষ কথোপকথন হয়। ✨

✅ এই ভিডিওতে থাকছে:
• আদম (আ.) কেন নিষিদ্ধ ফল খেলেন?
• মুসা (আ.)-এর প্রশ্ন ও আদম (আ.)-এর উত্তর
• তাকদীর ও আল্লাহর হিকমত সম্পর্কিত শিক্ষা
• আমাদের জন্য কী শিক্ষা রয়েছে এই ঘটনায়

👉 এই কাহিনী আমাদেরকে তাকদীর, তওবা ও আল্লাহর রহমতের প্রতি আস্থা রাখতে শেখায়।

#IslamicStory #AdamAndMusa #ProphetsConversation #QuranStories #HadithStory #Taqdir #IslamicEducation

জান্নাতে নিষিদ্ধ ফল খাওয়া নিয়ে আদম (আ.) ও মুসা (আ.)-এর কথোপকথন

ভূমিকা

কুরআন ও সহিহ হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, প্রথম মানুষ হযরত আদম (আ.)-কে আল্লাহ তাআলা জান্নাতে বসবাসের সুযোগ দিয়েছিলেন। সেখানে তিনি সবকিছু ভোগ করার অনুমতি পেলেও একটি নির্দিষ্ট ফল খেতে নিষেধ করা হয়েছিল। কিন্তু শয়তানের প্ররোচনায় আদম (আ.) ও হাওয়া (আ.) সেই নিষিদ্ধ ফল খেয়ে ফেলেন। এরপর আল্লাহ তাঁদের পৃথিবীতে নামিয়ে দেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কিয়ামতের দিন নবী মুসা (আ.) আদম (আ.)-এর সাথে একটি গুরুত্বপূর্ণ কথোপকথনে যুক্ত হবেন, যা আমাদের জন্য গভীর শিক্ষা বহন করে।


জান্নাতে নিষিদ্ধ ফলের ঘটনা

আল্লাহ তাআলা কুরআনে বলেন:
“হে আদম! তুমি ও তোমার স্ত্রী জান্নাতে বসবাস করো এবং সেখান থেকে স্বেচ্ছায় যা খেতে চাও খাও। তবে এ গাছের কাছে যেও না, নইলে তোমরা জালিমদের অন্তর্ভুক্ত হবে।”
(সূরা আল-বাকারাহ: ৩৫)

কিন্তু ইবলিস প্রতারণার মাধ্যমে আদম (আ.)-কে ভুল পথে পরিচালিত করে। আল্লাহর নির্দেশ ভঙ্গ করার পর আদম (আ.) তওবা করেন এবং আল্লাহ তাঁর তওবা কবুল করেন।


মুসা (আ.)-এর প্রশ্ন

এক সহিহ হাদিসে এসেছে (সহিহ মুসলিম, সহিহ বুখারী), নবী মুসা (আ.) কিয়ামতের দিন আদম (আ.)-কে বলবেন:

“আপনি তো আমাদের পিতা, আল্লাহ আপনাকে নিজ হাতে সৃষ্টি করেছেন, ফেরেশতাদেরকে আপনাকে সিজদা করার আদেশ দিয়েছেন, জান্নাতে বসবাসের সুযোগ দিয়েছেন। কিন্তু তারপরও কেন আপনি নিষিদ্ধ ফল খেলেন, যার কারণে আপনি ও আমরা সবাই জান্নাত থেকে পৃথিবীতে নেমে আসতে বাধ্য হলাম?”

মুসা (আ.)-এর প্রশ্নে যেন অভিযোগের সুর ছিল যে, আদম (আ.)-এর কারণে মানবজাতি জান্নাত থেকে পৃথিবীতে নেমেছে।


আদম (আ.)-এর উত্তর

আদম (আ.) উত্তরে বলেন:

“হে মুসা! আল্লাহ তাআলা তো তাওরাত আপনাকে দিয়েছেন। তাতে কি লেখা ছিল না যে, আমার এ কাজ (নিষিদ্ধ ফল খাওয়া) ঘটবে?”

মুসা (আ.) বলেন: “হ্যাঁ।”

তখন আদম (আ.) বলেন:
“তাহলে তুমি কীভাবে এমন বিষয়ে আমাকে দোষারোপ করছ, যা আমার সৃষ্টি হওয়ার চল্লিশ বছর আগে আল্লাহর তাকদীরে লিখিত ছিল?”

রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন:
“এভাবে আদম (আ.) মুসা (আ.)-এর সাথে বিতর্কে জয়ী হন।”
(সহিহ বুখারী, সহিহ মুসলিম)


এই কথোপকথনের শিক্ষা

১. তাকদীরের প্রতি বিশ্বাস – মানুষের জীবনে যা ঘটে, তা আল্লাহর পূর্বনির্ধারিত তাকদীর অনুযায়ীই ঘটে।
২. মানুষ ভুল করে, কিন্তু তওবা হলো মূল বিষয় – আদম (আ.) ভুল করেছিলেন, কিন্তু আল্লাহর কাছে আন্তরিক তওবা করেছিলেন এবং আল্লাহ তা কবুল করেছিলেন।
৩. আল্লাহর রহমত সর্বশ্রেষ্ঠ – কোনো ভুলই স্থায়ীভাবে আল্লাহর রহমত থেকে মানুষকে বঞ্চিত করতে পারে না, যদি সে আন্তরিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করে।
৪. শিক্ষণীয় বিতর্ক – মুসা (আ.)-এর প্রশ্ন মানুষের দৃষ্টিকোণ থেকে যথার্থ হলেও, আদম (আ.) তাকদীরের গভীর সত্য প্রকাশ করেছিলেন।


উপসংহার

আদম (আ.) ও মুসা (আ.)-এর এই কথোপকথন মানব জীবনে তাকদীর, ভুল ও তওবার গভীর শিক্ষা দেয়। আমরা বুঝতে পারি যে, আল্লাহর নির্দেশ মানা এবং ভুল হলে সঙ্গে সঙ্গে তওবা করা মুসলমানের প্রধান দায়িত্ব। আর যা কিছু ঘটে, তা আল্লাহর ইলম ও তাকদীরের অন্তর্ভুক্ত। এই প্রবন্ধ আমাদেরকে আল্লাহর রহমতের প্রতি আস্থা রাখতে, পাপের পর হতাশ না হয়ে তওবার দিকে ফিরে আসতে অনুপ্রাণিত করে।

জান্নাতে নিষিদ্ধ ফল খাওয়া নিয়ে আদম ও মুসা (আ.)-এর কথোপকথনের বিবরণ হাদিসের বর্ণনায় পাওয়া যায়। হাদিসের বিখ্যাত কিতাব বুখারি ও মুসলিমসহ কয়েকটি হাদিস গ্রন্থে হাদিসটি বর্ণিত হয়েছে।

মুসলিম শরিফের বর্ণনায় এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আদম আলাইহিস সালাম ও মুসা আলাইহিস সালাম তাঁদের রবের সামনে বিতর্কে অবতীর্ণ হন। বিতর্কে আদম আলাইহিস সালাম মুসা আলাইহিস সালামের ওপর বিজয়ী হন।

মুসা আলাইহিস সালাম বলেন, আপনি তো সেই আদম—যাকে আল্লাহ তাআলা নিজ কুদরতি হাতে সৃষ্টি করেছেন এবং আপনার মধ্যে তিনি রূহ ফুঁকে দিয়েছেন। তিনি তাঁর ফিরিশতাদের মাধ্যমে আপনাকে সিজদা করিয়েছেন এবং জান্নাতে আপনাকে বসবাস করতে দিয়েছেন। এরপর আপনি আপনার ভুলের কারণে মানুষকে পৃথিবীতে নামিয়ে এনেছেন।

আদম আলাইহিস সালাম বলেন, আপনি তো সেই মুসা—যাকে আল্লাহ রিসালাতের দায়িত্ব ও তাঁর কালামসহ বিশেষ মর্যাদায় মনোনীত করেছেন এবং আপনাকে দান করেছেন ফলক (তাওরাত), যাতে সব কিছুর বর্ণনা লিপিবদ্ধ আছে এবং একান্তে কথোপকথনের জন্য বিশেষ নৈকট্য দান করেছেন। আচ্ছা, আমার সৃষ্টির কত বছর আগে আল্লাহ তাওরাত লিপিবদ্ধ করেছেন বলে আপনি দেখতে পেয়েছেন? মুসা আলাইহিস সালাম বলেন, ৪০ বছর আগে। আদম আলাইহিস সালাম বলেন, আপনি কি তাতে একথা পেয়েছেন, আদম তাঁর প্রতিপালকের নির্দেশ অমান্য করেছে এবং পথহারা হয়েছে। (মুসা) বলেন, হ্যাঁ।

আদম আলাইহিস সালাম বলেন, এরপর আপনি আমাকে আমার এমন কাজের জন্য কেন তিরস্কার করছেন, যা আমাকে সৃষ্টি করার ৪০ বছর আগে আল্লাহ আমার ওপর নির্ধারণ করে রেখেছেন? রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, এরপর আদম আলাইহিস সালাম মুসা আলাইহিস সালামের ওপর বিজয়ী হন। [মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন) হাদিস : ৬৫০৩]

আলোচ্য হাদিস থেকে কয়েকটি বিষয় জানা যায়—
১. তাকদির বা ভাগ্যলিপি সত্য।
২. আল্লাহ তাআলার আছে বিশেষ কিছু সিফাত বা গুণ, যার ধরন মানুষের অজানা।
৩. আদম আলাইহিস সালাম প্রথম মানব এবং আল্লাহর কুদরতি হাতে তাঁর সৃষ্টি।
৪. দ্বিনি বিষয়ে অবগত ব্যক্তিরা জানার জন্য ও সত্য উদঘাটনে বিতর্ক করতে পারবে।
৫. মুসা আলাইহিস সালামের বিশেষ বৈশিষ্ট্যও আলোচ্য হাদিস থেকে জানা যায়।

ইসলামিক কার্টুন বাংলা | শিশুদের জন্য শিক্ষামূলক ইসলামিক স্টোরি | Islamic Cartoon Bangla

আরবি হরফ পরিচিতি ও শিক্ষা | Arbi Horof Shikha Bangla | Learn Quran Easily Step by Step

azadservice https://www.azadservice.com

WhatsApp : wa.me/8801933307999
Email: dropshippingbuisness2000@gmail.com
Call : +8801933307999
Youtube : https://www.youtube.com/@DropshippingService?sub_confirmation=1

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours