শিশুকে ছোটবেলা থেকেই নামাজে অভ্যস্ত করা একজন অভিভাবকের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। ✨
রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, “তোমরা সন্তানদের সাত বছর বয়সে নামাজের নির্দেশ দাও।” (আবু দাউদ)
✅ এই ভিডিওতে থাকছে:
• কেন ছোটবেলা থেকেই শিশুদের নামাজ শিখানো জরুরি
• নামাজের অভ্যাস গড়ে তোলার সহজ উপায়
• পরিবার ও পরিবেশের ভূমিকা
• শিশুদের জন্য উৎসাহ ও অনুপ্রেরণার কৌশল
👉 সন্তানদের নামাজে অভ্যস্ত করে তুলুন, যাতে তারা আল্লাহর নেক বান্দা হয়ে বড় হতে পারে।
#IslamicParenting #NamazForKids #SalatTraining #IslamicEducation #BanglaIslamicVideo #ShishuNamaz

আল্লাহপরিবার-সন্তানদের ছোটবেলা থেকেই নামাজে অভ্যস্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন—‘তুমি তোমার পরিবারকে নামাজের নির্দেশ দাও এবং নিজেও এতে অবিচল থাকো।’ (সুরা ত্ব-হা, আয়াত : ১৩২)
এ আয়াত প্রমাণ করে যে সন্তানদের মসজিদের সাথে পরিচিত করা তাদের ইসলামী শিক্ষা ও চরিত্র গঠনের অংশ। নিজেকে ও পরিবারকে জাহান্নাম থেকে বাঁচানো। ভয়াবহ জাহান্নাম থেকে নিজেকে ও পবিরাবরকে বাঁচানোর জন্য পবিত্র কোরআনে নির্দেশনা এসেছে। পরিবারকে বাঁচাতে হলে অবশ্যই ছোট থেকে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা পিতা-মাতার দায়িত্ব। আল্লাহ বলেন : ‘হে ঈমানদাররা! তোমরা নিজেদের এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে সেই অগ্নি থেকে রক্ষা করো, যার ইন্ধন হবে মানুষ ও পাথর।’ (সুরা আত-তাহরিম, আয়াত : ০৬)
সন্তানদের দ্বিনের উত্তরাধিকারী বানানো
মুমিনের দোয়া হলো, পরিবার-সন্তানদের দ্বীনের পথে বড় করা। আল্লাহর শেখানো দোয়া—‘হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদের স্ত্রী ও সন্তানদের চোখের শীতলতা দাও এবং আমাদের মুত্তাকীদের জন্য আদর্শ বানাও।’ (সুরা আল-ফুরকান, আয়াত : ৭৪)
সন্তানরা যেন মুত্তাকিদের অনুসারী হয়, এজন্য তাদের মসজিদের পরিবেশে এনে অভ্যস্ত করা উচিত।
মহানবী (সা.) শিশুদের নিয়ে নামাজ পড়েছেন
রাসুলুল্লাহ (সা.) কখনো শিশুদের মসজিদে আসতে নিষেধ করেননি; বরং তাদের কোলে বা কাঁধে নিয়ে নামাজ পড়েছেন। আবু কাতাদা (রা.) বলেন, আমি নবী (সা.)-কে নামাজ পড়তে দেখেছি, তিনি নাতনি উমামাহকে কাঁধে বহন করতেন। রুকুতে গেলে নামিয়ে দিতেন, দাঁড়ালে আবার কাঁধে নিতেন। (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ১৮২) শিশুর উপস্থিতি নামাজের জন্য বাধা নয়, বরং ইসলামের শিক্ষা অনুযায়ী এটি স্বাভাবিক।
শিশুর কান্নায় নামাজ সংক্ষিপ্ত করা
নবি (সা.) শিশুদের কান্নার প্রতি মমতা দেখিয়ে নামাজ সংক্ষিপ্ত করতেন। রাসুলুুল্লাহ (সা.) বলেছেন : ‘আমি অনেক সময় দীর্ঘ করে সালাত আদায়ের ইচ্ছা নিয়ে দাঁড়াই। পরে শিশুর কান্নাকাটি শুনে সালাত সংক্ষিপ্ত করি। কারণ, শিশুর মাকে কষ্টে ফেলা আমি পছন্দ করি না।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৭৫)
এ হাদিস থেকে বোঝা যায় শিশুদের উপস্থিতি মসজিদে বৈধ এবং তাদের জন্য ইমাম ও মুসল্লিদের সহনশীল হওয়া উচিত।
খুতবা থামিয়ে শিশুদের কোলে নেওয়া
মহানবী (সা.)-এর কাছে শিশুর উপস্থিতি কখনো ঝামেলা ছিল না, বরং স্নেহের কারণ। একবার রাসুল (সা.) খুতবা দিচ্ছিলেন, এসময় হাসান ও হুসাইন হোঁচট খেতে খেতে এলেন। নবী (সা.) মিম্বর থেকে নেমে তাদের কোলে নিলেন এবং বলেন, ‘আল্লাহ সত্য বলেছেন, নিশ্চয়ই তোমাদের সন্তানরা পরীক্ষা।’ আমি এ দুজনকে দেখে আর ধৈর্য ধরতে পারলাম না।’ (বায়হাকি, হাদিস : ৫৮১৯)
শিশুদের মসজিদে আসা নবী (সা.)-এর কাছে প্রাকৃতিক ও স্বাভাবিক ছিল।
ছোটদের প্রতি দয়া প্রদর্শন
শিশুদের প্রতি দয়াদ্র ও সহনশীল হওয়া উচিত। রাসুল (সা.) বলেছেন : ‘যে আমাদের ছোটদের প্রতি দয়া করে না এবং বড়দের মর্যাদা দেয় না, সে আমাদের দলভুক্ত নয়।’ (তিরমিজি, হাদিস : ১৯২১)
সুতরাং শিশুদের প্রতি বিরক্ত না হয়ে তাদের প্রতি মমতা প্রদর্শন আবশ্যক। আর অভিভাবকের দায়িত্ব হলো, শিশুদের ধীরে ধীরে শৃঙ্খলিত করা, আর মুসল্লিদের কর্তব্য হলো সহনশীলতা ও দয়া প্রদর্শন। কেননা, শিশুদের আজকের উপস্থিতিই আগামী দিনের মসজিদভরা ভবিষ্যত।
লেখক : শিক্ষক, প্যারামাউন্ট স্কুল এন্ড কলেজ, রাজশাহী।

শিশুদের নামাজে অভ্যস্ত করতে হবে
ভূমিকা
নামাজ ইসলাম ধর্মের অন্যতম প্রধান ইবাদত। এটি ইসলামের দ্বিতীয় স্তম্ভ এবং প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ফরজ। কিন্তু নামাজ পালনের অভ্যাস কেবল প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য নয়, শিশুদেরও ছোটবেলা থেকেই নামাজের প্রতি আগ্রহী ও অভ্যস্ত করে তুলতে হবে। কারণ শৈশবে গড়ে ওঠা অভ্যাস সারা জীবনের জন্য স্থায়ী হয়। এজন্য অভিভাবকদের দায়িত্ব হলো শিশুদের নামাজ শেখানো ও তাদের মধ্যে নামাজের প্রতি ভালোবাসা সৃষ্টি করা।
রাসুলুল্লাহ ﷺ-এর নির্দেশ
রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন:
“তোমরা সন্তানদের সাত বছর বয়সে নামাজের নির্দেশ দাও এবং দশ বছর বয়সে না পড়লে তাদেরকে শাসন করো।”
(আবু দাউদ)
এই হাদিস থেকে বোঝা যায়, সাত বছর বয়স থেকেই শিশুকে নামাজে প্রশিক্ষণ দিতে হবে। এটি কোনো জবরদস্তি নয়, বরং অভ্যাস ও অনুশীলন করানোর নির্দেশ।
কেন শিশুদের নামাজে অভ্যস্ত করতে হবে
১. ইমানের ভিত্তি মজবুত করা – নামাজ হলো আল্লাহর সাথে সম্পর্ক দৃঢ় করার মাধ্যম।
২. শৃঙ্খলা শিক্ষা – নামাজ শিশুদের সময়ানুবর্তিতা ও শৃঙ্খলার শিক্ষা দেয়।
৩. নৈতিকতা গঠন – নামাজ শিশুদের হৃদয়ে আল্লাহভীতি ও নৈতিক মূল্যবোধ গড়ে তোলে।
৪. আজীবন অভ্যাস – শৈশবে শেখা নামাজের অভ্যাস বড় হয়ে জীবনভর সহজ হয়।
শিশুদের নামাজে অভ্যস্ত করার উপায়
১. নিজে উদাহরণ সৃষ্টি করা – শিশুরা বড়দের দেখে শিখে। তাই অভিভাবকরা যদি নিয়মিত নামাজ পড়েন, শিশুরাও তাতে উৎসাহী হবে।
2. ভালোবাসা দিয়ে শেখানো – প্রথম থেকেই শিশুকে নামাজ শেখাতে ধৈর্য ধরতে হবে, রাগ বা চাপ প্রয়োগ নয়।
৩. খেলা-খেলার ছলে শিখানো – ছোটদের জন্য নামাজকে আনন্দদায়ক করে তুলতে হবে, যেমন– সাজসজ্জা, সুর করে কোরআন তিলাওয়াত করা ইত্যাদি।
৪. উৎসাহ দেওয়া – নামাজ পড়লে প্রশংসা করা বা ছোট কোনো উপহার দেওয়া যেতে পারে।
৫. পরিবারে পরিবেশ তৈরি – পুরো পরিবার মিলে একসাথে নামাজ পড়লে শিশুরাও তাতে স্বাভাবিকভাবেই আগ্রহী হবে।
শিশুদের জন্য অনুপ্রেরণা
শিশুদের বোঝাতে হবে যে, নামাজ পড়া মানে শুধু দায়িত্ব পালন নয়, বরং এটি আল্লাহর সাথে কথা বলার সুযোগ। আল্লাহ নামাজ পড়া বান্দাকে ভালোবাসেন এবং নামাজ না পড়া বান্দা তাঁর রহমত থেকে দূরে চলে যায়। শিশুর মনে এ বিষয়টি সুন্দরভাবে বসিয়ে দিলে তারা নামাজের প্রতি আন্তরিক হয়ে উঠবে।
উপসংহার
শিশুদের নামাজে অভ্যস্ত করা প্রতিটি মুসলিম অভিভাবকের কর্তব্য। ছোটবেলা থেকেই যদি নামাজের প্রতি ভালোবাসা সৃষ্টি করা যায়, তবে সন্তান বড় হয়ে নামাজের প্রতি উদাসীন হবে না। অভিভাবক ও পরিবার যদি সচেতন থাকে এবং ভালোবাসা দিয়ে সন্তানকে নামাজ শেখায়, তবে প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ইসলামি সমাজে ইবাদতের চর্চা জারি থাকবে।
+ There are no comments
Add yours