ইসলামে মানুষের ধৈর্য ও পরীক্ষার প্রতিদান অসীম। একজন মুমিন যদি আল্লাহর পথে বা আল্লাহর পরীক্ষায় কোনো অঙ্গ হারান, আল্লাহ তাআলা তার জন্য জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। 🌸
✅ এই ভিডিওতে থাকছে:
• অঙ্গ হারানোর প্রতিদান সম্পর্কে হাদিস
• ধৈর্যশীলদের জন্য জান্নাতের প্রতিশ্রুতি
• দুনিয়ার কষ্ট ও পরকালের সুখের তুলনা
• মুমিনের জন্য শিক্ষা ও অনুপ্রেরণা
👉 যারা দুনিয়ার কষ্টে ভেঙে পড়েন, তারা যেন জান্নাতের অনন্ত সুখের প্রতিশ্রুতি মনে রাখেন।
#IslamicMotivation #JannahReward #HadithBangla #Sabr #IslamicReminder #BanglaIslamicVideo #Jannat
আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, ‘আল্লাহ তাআলা বলেন, যখন আমি আমার বান্দাকে তার প্রিয়তম দুটি জিনিস দ্বারা (চোখ থেকে বঞ্চিত করে) পরীক্ষা করি এবং সে ধৈর্য ধারণ করে আমি তাকে এই দুটির বিনিময়ে জান্নাত প্রদান করব।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫৬৫৩)
শিক্ষা
হাদিস গবেষকরা বলেন,
১. চোখ আল্লাহর দান ও অনুগ্রহের মধ্যে মহামূল্যবান দান।
২. যে ব্যক্তি চোখ বা অন্য কোনো অঙ্গ হারানোর পর ধৈর্য ধারণ করবে, আল্লাহ তাঁকে জান্নাত দান করবেন।
৩. হাদিসে চোখকে প্রিয়তম দুটি জিনিস বলা হয়েছে। যা দ্বারা মানবজীবনে দৃষ্টিশক্তির গুরুত্ব প্রমাণিত হয়।
৪. যে কোনো বিপদে মুমিন ধৈর্যধারণ করবে এবং আল্লাহর কাছে এর উত্তম প্রতিদান প্রত্যাশা করবে। (মাউসুয়াতুল হাদিসিয়্যা)
অঙ্গ হারানোর প্রতিদান জান্নাত
ভূমিকা
মানবজীবন হলো পরীক্ষা ও সংগ্রামের সমষ্টি। আল্লাহ তাআলা প্রত্যেক বান্দাকে ভিন্ন ভিন্নভাবে পরীক্ষা করেন—কখনো সম্পদ দিয়ে, কখনো দারিদ্র দিয়ে, কখনো সুস্থতা দিয়ে, আবার কখনো রোগ-ব্যাধি বা অঙ্গহানি দিয়ে। একজন মুমিন এসব পরীক্ষার মুখোমুখি হলে যদি ধৈর্য ধারণ করে, তবে আল্লাহ তাঁর জন্য জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে যে, অঙ্গ হারানো কিংবা চোখ নষ্ট হওয়ার মতো কঠিন পরীক্ষায় যারা ধৈর্যশীল থাকেন, তাদের জন্য জান্নাত অনিবার্য।
হাদিসে অঙ্গ হারানোর প্রতিদান
রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন:
“আল্লাহ বলেন, যখন আমি আমার কোনো বান্দার দুই প্রিয় জিনিস (অর্থাৎ চোখ) কেড়ে নেই, আর সে ধৈর্য ধরে, তখন তার প্রতিদান আমি জান্নাত দেই।”
(সহিহ বুখারী, হাদিস ৫৬৫৩)
এখানে চোখের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করা হলেও মূল শিক্ষা হলো, মানুষ যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হারালে যদি ধৈর্য ধরে, আল্লাহ তাকে জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দেন।
ধৈর্যের মর্যাদা
কুরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন:
“নিশ্চয়ই ধৈর্যশীলদেরকে তাদের প্রতিদান বিনা হিসাবেই পূর্ণমাত্রায় দেয়া হবে।”
(সূরা আয-যুমার: ১০)
অর্থাৎ, কোনো দুঃখ-কষ্ট, শারীরিক অঙ্গহানি কিংবা রোগ-ব্যাধি মুমিনের জন্য বৃথা যায় না। সে যদি ধৈর্য ধরে, তবে আল্লাহর নিকট তার মর্যাদা বৃদ্ধি পায় এবং জান্নাত তার জন্য নিশ্চিত হয়ে যায়।
অঙ্গ হারানোর মধ্যে আল্লাহর হিকমত
১. পাপ মোচন – রোগ-ব্যাধি বা অঙ্গ হারানোর কষ্টে মুমিনের গুনাহ মাফ হয়।
২. ধৈর্যের পরীক্ষা – এতে বোঝা যায়, সে আল্লাহর প্রতি কতটা দৃঢ় আস্থা রাখে।
৩. জান্নাতের নিশ্চয়তা – ধৈর্যের সাথে কষ্ট সহ্য করার পুরস্কার সরাসরি জান্নাত।
৪. আল্লাহর রহমতের দরজা উন্মুক্ত – ক্ষতির বিনিময়ে আল্লাহ তার জন্য আরও বড় কল্যাণ লিখে দেন।
আমাদের জন্য শিক্ষা
- দুনিয়ার জীবন অস্থায়ী, কিন্তু জান্নাতের প্রতিদান চিরস্থায়ী।
- শারীরিক ক্ষতি বা অঙ্গ হারানো আমাদের জীবনের সমাপ্তি নয়, বরং এটি জান্নাত লাভের একটি বিশেষ সুযোগ হতে পারে।
- একজন মুমিনের উচিত আল্লাহর প্রতি আস্থা রাখা এবং প্রতিটি পরীক্ষায় ধৈর্যশীল থাকা।
উপসংহার
মানুষের দুনিয়ার জীবন যতই কষ্টময় হোক না কেন, একজন মুমিনের জন্য এর বিনিময়ে জান্নাত অপেক্ষা করছে। চোখ, হাত-পা বা শরীরের যে কোনো অঙ্গ হারানো দুঃখজনক হলেও, আল্লাহর প্রতিশ্রুত জান্নাত এর চেয়ে বহুগুণ শ্রেষ্ঠ প্রতিদান। তাই দুনিয়ার পরীক্ষায় হতাশ না হয়ে ধৈর্য ও তওবা অবলম্বন করা মুমিনের দায়িত্ব। কষ্টের বিনিময়ে জান্নাতের এ প্রতিশ্রুতি আমাদের জন্য অনন্ত প্রেরণা হয়ে থাকবে।
+ There are no comments
Add yours