ইসলামি বিধান অনুযায়ী যে বয়সে সন্তানের বিছানা আলাদা জরুরি

Estimated read time 1 min read

পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্পদ সন্তান। সন্তানের মায়া মমতাই শান্তি দেয় পিতা-মাতাকে। সন্তানের ভালোবাসায় বাবা-মা সব ত্যাগ স্বীকার করেন। তবে সন্তানকে যদি সঠিক শিক্ষা না দেওয়া যায় তাহলে সেই সন্তানই অশান্তি বয়ে আনতে পারে পরিবারে।

সন্তানের উত্তম শিক্ষা ও তরবিয়তের ব্যবস্থা করা, নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা বাবা-মায়ের দায়িত্ব। ছোটবেলা থেকেই সন্তানের লালন-পালনে যত্নবান হওয়া উচিত। কোরআন হাদিসের আলোকে সন্তানকে গড়ে তোলা উচিত। অধিকাংশ বাবা-মায়েরা চিন্তিত থাকেন কোন বয়স থেকে সন্তানের বিছানা আলাদা করবেন বা কখন আলাদা করা উচিত।

আমর ইবনে শোয়াইব (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন,

 مُرُوا أَوْلاَدَكُمْ بِالصَّلاَةِ وَهُمْ أَبْنَاءُ سَبْعِ سِنِينَ وَاضْرِبُوهُمْ عَلَيْهَا وَهُمْ أَبْنَاءُ عَشْرِ سِنِينَ وَفَرِّقُوا بَيْنَهُمْ فِى الْمَضَاجِعِ

তোমাদের সন্তানদের বয়স সাত বছর হলে তাদেরকে নামাজ শিক্ষা দাও, দশ বছর বয়স হলে নামাজের জন্য তাদেরকে প্রহার কর আর তাদের পরস্পরের বিছানা আলাদা করে দাও। (সুনানে আবু দাউদ: ৪৯৫) 

আরও পড়ুন: কী কারণে ঈমান বাড়ে বা কমে?

হাদিসের সূত্রানুযায়ী, যখন সন্তানের বয়স দশ বছর হবে তখন তাকে আলাদা বিছানায় বা পৃথক করে শোয়ানোর ব্যবস্থা করা অত্যবশ্যক। এ বয়সের পর কোনোভাবেই একসাথে থাকা যাবে না। যখনই বয়স সাত বছর হয়ে যাবে, তখন থেকেই  আলাদা থাকার বিষয়ে তাগিদ ও ব্যবস্থাপনা করতে হবে। প্রথমে বাবা-মায়ের কক্ষে ছোট একটি খাটের মাধ্যমে তাদের ঘুমানোর ব্যবস্থা করবে। পরে আস্তে আস্তে পৃথক কক্ষে শিফট করবে। এভাবে আলাদা বিছানায় রাখবে।

দশ বছর বয়সের পর যদিও বাবার সাথে ছেলের ও মায়ের সাথে মেয়ের শোয়ার অবকাশ আছে। তবে এক্ষেত্রেও আলাদা থাকার সুযোগ থাকলে একসাথে থাকা উচিত নয়।

কিছু বর্ণনায় সাত বছরের কথাও এসেছে। সেই হিসেবে সাত বছর বয়স হলেই বিছানা পৃথক করা সতর্কতা। তবে সর্বোচ্চ দশ বছর পর্যন্ত অবকাশ আছে। দশ বছর হয়ে গেলে বিছানা পৃথক করা ওয়াজিব। সামর্থ্য থাকার পরেও তা না করলে গুনাহ হবে। আমাদের সমাজের অনেকেই বিষয়টিকে গুরুত্বহীন মনে করেন যা সরাসরি সুন্নাহ পরিপন্থি।

আরও পড়ুন: জোড়া কলা খেলে যমজ সন্তান জন্ম নেয়, যা বলছে ইসলাম

এ হাদিসের আলোকে ফকিহরা বলেন, দশ বছর হলে সন্তানদের বিছানা পৃথক করে দেওয়া ওয়াজিব। এ বয়সে বাবার সাথে মেয়েদের ও মায়ের সাথে ছেলেদের একই বিছানায় শোয়া নিষিদ্ধ। ছেলে ও মেয়েদের এক বিছানায় শোয়া নিষিদ্ধ, ছেলেদের পরস্পর ও মেয়েদের পরস্পর এক বিছানায় শোয়াও নিষিদ্ধ। তবে মায়ের সাথে এক মেয়ের বা বাবার সাথে এক ছেলের ঘুমানো জায়েজ।

আর মেয়েদের বিছানা বাবা ও ছেলেদের থেকে সম্পূর্ণ পৃথক হওয়া জরুরি। ওই ক্ষেত্রে শুধু দূরত্ব বা বালিশের আড়াল গ্রহণযোগ্য নয়। (আদ্দুররুল মুখতার, রদ্দুল মুহতার: ৬/৩৮২)

বিছানা পৃথক হওয়া মানে প্রত্যেক সন্তানের জন্য ভিন্ন ভিন্ন রুমের ব্যবস্থা করে দিতে হবে তা নয়। বরং এক রুমে ভিন্ন খাট, চকি বা ভিন্ন বিছানার ব্যবস্থা করলেও হবে। একান্ত অপারগতার ক্ষেত্রে ছেলেদের এক খাটে শোয়ার ব্যবস্থা করা যায়, তবে তাদের মাঝখানে যেন যথাযথ দূরত্ব থাকে তা নিশ্চিত করতে হবে।

সন্তানের বিছানা আলাদা করার বিষয়ে ইসলামের নির্দেশনা

সন্তান পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্পদ। সন্তানের মায়া মমতাই মানুষকে শান্তি দেয়। সন্তানের ভালোবাসায় বাবা-মা সব ত্যাগ স্বীকার করেন। সন্তান লালন-পালনে সঠিক ও শরয়ি পদ্ধতি অবলম্বন না করলে বিপদ হতে পারে। সন্তানই আপনার অশান্তির কারণ হয়ে যেতে পারে।

ছোটবেলা থেকেই সন্তানের লালন-পালনে যত্নবান হওয়া উচিত। কোরআন হাদিস থেকে প্যারেন্টিং শেখা উচিত। সন্তানের বিছানা আলাদা কখন করবেন, এ বিষয়ে বাবা-মা চিন্তিত থাকেন

হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী সন্তানের বয়স দশবছর হলে তাকে পৃথক বিছানায় বা আলাদা করে শোয়ানোর ব্যবস্থা করা জরুরি। এ বয়সের পর একসাথে থাকা যাবে না কোনোভাবেই। যখনই সাত বছর হয়ে যাবে, তখন থেকেই থাকে আলাদা থাকার বিষয়ে তাগিদ ও ব্যবস্থাপনা করতে হবে। প্রথমে বাবা-মায়ের রুমে ছোট একটি খাটের মাধ্যমে তাদের শোয়ার ব্যবস্থা করবে। পরে আস্তে আস্তে আলাদা রুমে শিফট করবে। এভাবে আলাদা বিছানায় রাখবে।

দশ বছর বয়সের পর যদিও বাবার সাথে ছেলের ও মায়ের সাথে মেয়ের শোয়ার অবকাশ আছে। তবে এক্ষেত্রেও আলাদা থাকার সুযোগ থাকলে একসাথে থাকা উচিত নয়।


কিছু বর্ণনায় সাত বছরের কথাও এসেছে। সেই হিসেবে সাত বছর বয়স হলেই বিছানা পৃথক করা সতর্কতা। তবে সর্বোচ্চ দশ বছর পর্যন্ত অবকাশ আছে। দশ বছর হয়ে গেলে বিছানা পৃথক করা ওয়াজিব। সামর্থ্য থাকার পরেও তা না করলে গুনাহ হবে। আমাদের সমাজের অনেকেই বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয় না যা সরাসরি সুন্নাহ পরিপন্থি।


হযরত আমর ইবনু শুআইব রহ. থেকে পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও তার দাদার সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের সন্তানদের বয়স সাত বছর হলে তাদেরকে নামাজের জন্য নির্দেশ দাও। যখন তাদের বয়স দশ বছর হয়ে যাবে তখন (নামাজ আদায় না করলে) এজন্য তাদেরকে মারবে। তাদের ঘুমের বিছানা আলাদা করে দিবে। (সুনানে আবু দাউদ ৪৯৫, মুসনাদে আহমাদ ৬৬৮৯, সুনানে দারা কুতনি ৮৮৮)

হযরত আব্দুর রহমান বিন আবি সাঈদ তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন যে, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, এক পুরুষ অন্য পুরুষের সতরের দিকে দৃষ্টি দিবে না, এক নারী অন্য নারীর সতর দেখবে না। এক পুরুষ অন্য পুরুষের সাথে একই চাদরের নিচে শোবে না। এক নারী অন্য নারীর সাথে একই কাপড়ের নিচে শোবে না। (মুসনাদে আহমাদ ১১৬০১)

হযরত আব্দুল মালিক বিন রাবি বিন সাবরাহ পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও দাদার সূত্রে বর্ণনা করেন, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন সন্তানের বয়স সাত বছর হয়, তখন তার বিছানা আলাদা করে দাও। (সুনানে দারা কুতনি ৮৮৬, মুস্তাদরাক আলাস সহিহাইন ৭২১)

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours